Blog
রাতে ভুল খাবার গ্রহনে গ্যাস্ট্রিক থেকে অনিদ্রা, দির্ঘ দিন চললে স্ট্রোক থেকে ক্যাসার পর্যন্ত হতে পারে।

রাতে ভুল খাবার গ্রহণ, যেমন মসলাযুক্ত বা ভারী খাবার, এবং দেরিতে রাতের খাবার খাওয়া শরীরের হজম প্রক্রিয়ায় সমস্যা সৃষ্টি করে এবং ঘুমের গুণগত মান হ্রাস করে। এই অভ্যাসগুলো দীর্ঘমেয়াদে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা, অনিদ্রা, স্ট্রোক এবং এমনকি ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
মসলাযুক্ত খাবার ও ঘুমের ব্যাঘাত
মসলাযুক্ত খাবারে থাকা ক্যাপসাইসিন নামক যৌগ শরীরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যা ঘুমের জন্য প্রয়োজনীয় স্বাভাবিক তাপমাত্রা হ্রাসের প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে। এছাড়া, এই যৌগ হজম প্রক্রিয়ায় সমস্যা সৃষ্টি করে, যার ফলে গ্যাস্ট্রিক ও অম্বলের সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, মসলাযুক্ত খাবার খাওয়ার পর শুয়ে পড়লে অম্বলের ঝুঁকি বাড়ে, যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায় ।
ভারী খাবার ও দেরিতে রাতের খাবার গ্রহণের প্রভাব
ভারী খাবার, যেমন চর্বিযুক্ত বা উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার, হজমে সময় নেয় এবং রাতে হজম প্রক্রিয়া ধীরগতিতে চলে। এটি গ্যাস্ট্রিক সমস্যা সৃষ্টি করে এবং ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, ঘুমের অন্তত ৩ ঘণ্টা আগে রাতের খাবার গ্রহণ করা উচিত, যাতে হজম প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় এবং ঘুমের গুণগত মান উন্নত হয় ।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
- ড. লিসা মেডালি, ইউনিভার্সিটি অফ শিকাগোর বিহেভিয়োরাল স্লিপ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, বলেন: “মসলাযুক্ত খাবার হজমে সমস্যা সৃষ্টি করে এবং ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।”
- প্রফেসর ফস্টার, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির স্লিপ বিশেষজ্ঞ, বলেন: “ঘুমের আগে ভারী খাবার গ্রহণ শরীরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যা ঘুমের জন্য প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা হ্রাসের প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে।”
ঘুমের গুণগত মান উন্নত করার জন্য পরামর্শ
- ঘুমের অন্তত ৩ ঘণ্টা আগে রাতের খাবার গ্রহণ করুন: এটি হজম প্রক্রিয়াকে সম্পন্ন হতে সাহায্য করে এবং ঘুমের গুণগত মান উন্নত করে।
- মসলাযুক্ত ও ভারী খাবার এড়িয়ে চলুন: রাতের খাবারে হালকা ও সহজপাচ্য খাবার বেছে নিন।
- ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন: এই উপাদানগুলো ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
- সঠিক ঘুমের রুটিন অনুসরণ করুন: প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া ও জাগা শরীরের সার্কেডিয়ান রিদমকে সঠিক রাখে।
গ্যাস্ট্রিক সমস্যা ও অনিদ্রা
মসলাযুক্ত খাবারে থাকা ক্যাপসাইসিন শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে, যা ঘুমের জন্য প্রয়োজনীয় স্বাভাবিক তাপমাত্রা হ্রাসের প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে। এছাড়া, এই যৌগ হজম প্রক্রিয়ায় সমস্যা সৃষ্টি করে, যার ফলে গ্যাস্ট্রিক ও অম্বলের সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, মসলাযুক্ত খাবার খাওয়ার পর শুয়ে পড়লে অম্বলের ঝুঁকি বাড়ে, যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।
অনিদ্রা ও স্ট্রোকের ঝুঁকি
অনিদ্রা বা ঘুমের সমস্যা দীর্ঘমেয়াদে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যারা অনিদ্রার একাধিক উপসর্গে ভোগেন, তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি ৫১% পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। এই ঝুঁকি ৫০ বছরের নিচের ব্যক্তিদের মধ্যে আরও বেশি।
অনিদ্রা ও ক্যান্সারের সম্ভাবনা
ঘুমের ব্যাঘাত ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, অনিদ্রা বা ঘুমের সমস্যা গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার এবং কোলোরেক্টাল ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করতে পারে।
উপসংহার
রাতের খাবারে মসলাযুক্ত ও ভারী খাবার এবং দেরিতে রাতের খাবার গ্রহণ শরীরের হজম প্রক্রিয়ায় সমস্যা সৃষ্টি করে এবং ঘুমের গুণগত মান হ্রাস করে। সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও ঘুমের রুটিন অনুসরণ করে আমরা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা, অনিদ্রা, স্ট্রোক এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করতে পারি।